Sponsored

জীবনসঙ্গিনী হয়নি, তবু প্রেম এসেছিল—সেই বলিউড নায়িকার জন্য আজীবন একা রতন টাটা?

 


ভারতের সবচেয়ে সম্মানিত শিল্পপতিদের একজন রতন টাটার জীবনে বিয়ের বাঁধন কখনোই জায়গা পায়নি। ৮৬ বছরের জীবনে তিনি হয়ে উঠেছেন নৈতিকতা, দানশীলতা আর দূরদর্শিতার এক জীবন্ত প্রতিমূর্তি। কিন্তু এত অর্জনের মাঝেও এক প্রশ্ন বারবার উঁকি দেয়—তিনি কেন কখনো বিয়ে করলেন না?

রতন টাটা নিজেই জানিয়েছেন, জীবনে একাধিকবার বিয়ে প্রায় ঠিক হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেটা আর এগোয়নি। কখনো পারিবারিক বাধা, কখনো পেশাগত অঙ্গীকার—সব মিলিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে একাকীত্বকেই সঙ্গী করতে হয়েছে তাঁকে। তবে সেই একাকীত্ব যে একেবারে হৃদয়শূন্য ছিল না, তা স্বীকার করেছেন খোদ তিনি।

এক সময় বলিউডের রঙিন জগতে এসেছিল হৃদয়ের বাঁধন

শোনা যায়, রতন টাটার জীবনে একসময় প্রেম এসেছিল এক বলিউড নায়িকার হাত ধরে। তাঁর নাম—সিমি গারেওয়াল। ষাট ও সত্তরের দশকে যিনি ছিলেন রূপ, মেধা ও আধুনিকতা—এই তিনের প্রতীক। সত্যজিৎ রায়ের অরণ্যের দিনরাত্রি থেকে শুরু করে রাজ কাপুরের মেরা নাম জোকার—সিমি বলিউডে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন অনন্যতার সঙ্গে।

রতন ও সিমির সম্পর্ক কোনো গুজব ছিল না। কর্পোরেট অঙ্গন থেকে সিনে মহল—সব জায়গাতেই কানাঘুষো চলত, এই ‘পারফেক্ট ম্যাচ’ নিয়ে। তাঁদের মধ্যকার মিল ছিল চমকপ্রদ—দুজনেই পরিশীলিত, ইংরেজিতে দক্ষ, নিঃসঙ্গ ও ব্যতিক্রমী জীবনচর্চার প্রতি আগ্রহী।

কিন্তু কেন হয়নি মিলন?

এই প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা। কখনো সিমি তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “রতন খুব ভালো মানুষ। আমাদের মধ্যে একটা দারুণ সম্পর্ক ছিল।” তবে সেই সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কোথাও গড়ায়নি। অনেকেই মনে করেন, সমাজের কাঠামো, দায়িত্বের পাহাড় এবং জীবনপথের ভিন্নতা—এই তিনই তাঁদের দূরে সরিয়ে দেয়।

রতন টাটা এই বিষয়ে কখনোই প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি—এটাই তাঁর শৈল্পিক সংযমের পরিচয়। কিন্তু তাঁর নীরবতাই যেন আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়—হয়তো হৃদয়ের গভীরে কোথাও সেই প্রেম রয়ে গেছে।

নিঃসঙ্গতা নয়, দায়িত্বই ছিল তাঁর সঙ্গী

জীবনসঙ্গী না থাকলেও রতন টাটার সঙ্গী ছিল দায়িত্ববোধ, মানবতা ও সমাজের প্রতি তাঁর ভালোবাসা। টাটা ট্রাস্ট ও নানা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি যে অসংখ্য মানুষের জীবনে আলো এনেছেন, তা আজ ইতিহাস।

তিনি একবার বলেছিলেন, “যদি সময়টা ঠিক থাকত, তাহলে হয়তো আজ অন্য রকম কিছু হতো।” হয়তো এই “ঠিক সময়ের” অপেক্ষাতেই, কোনো এক নীরব ভালোবাসার স্মৃতি নিয়ে তিনি এগিয়ে গেছেন সমাজের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে।


রতন টাটা একা থেকেছেন, কিন্তু নিঃসঙ্গ ছিলেন না। তাঁর জীবনের প্রেম যেমন নিঃশব্দ ছিল, তেমনই তাঁর অবদান—নিরব, অথচ শক্তিশালী।


Post a Comment

0 Comments